ভাবতে পারেন আমাদের পায়ের নিচেই লুকিয়ে আছে এমন কিছু শহর সুরঙ্গ বাংকার আর গুহা দিয়ে তৈরি জগৎ যেগুলো আমাদের কল্পনার চাইতেও বেশি অবিশ্বাস্য কোথাও আছে পরমাণু যুদ্ধের জন্য তৈরি আস্ত শহর কোথাও আবার ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে যাওয়া গোপন লোকালয় এমনকি কিছু জায়গা এতটাই গোপন যে সরকার আজও সেখানে কি হয় তা প্রকাশ করেনি কি হয় সেখানে তবে আজকে আমরা সেগুলো প্রকাশ করতে চলেছি কি আছে আমাদের এই পৃথিবীর মাটির গভীরের জগতে চলুন এক এক করে রহস্যময় এসব গোপন সুরঙ্গে প্রবেশ করা যাক
এই স্থাপনাটা যেন এক সাইন্স ফিকশনের বাস্তব রূপ চায়েন পর্বতের বিশাল গ্রানাইট পাহাড়ের অভ্যন্তরে লুকিয়ে আছে এক অদ্ভুত শহর এটা যেন কোন ভূগর্ভস্থ ভবন না এটা হলো এমন এক সামরিক দুর্গ যা সরাসরি পারমাণবিক হামলার ধাক্কা সামলে টিকে থাকতে পারে 1960 এর দশকে স্নায়ু যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এই বাংকারটিকে তৈরি করেছিল 2000 ফুট পাথরের নিচে লুকিয়ে থাকা স্থাপনা কোন সাধারণ জায়গা না এটা নর্থ আমেরিকান এরোস্পেস ডিফেন্স কমান্ডের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা কমান্ড সেন্টার এখানে প্রবেশের জন্য আছে বিশাল ধাতব দরজা যার প্রতিটা 25 টনেরও বেশি ওজনের আর এসব দরজার পেছনে আছে এক একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ শহর রয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা বিশাল পানির ট্যাংক বায়ু পরিশোধনের প্রযুক্তি এমনকি কয়েক মাস টিকে থাকা মতো খাবারের মজুদ এই কমপ্লেক্স একসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কেন্দ্র ছিল যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধবিমান এমনকি অন্যান্য সামরিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হতো যদিও এটা এখন আগের মতো আর ব্যবহার হয় না তবে এখনো এটা একেবারে চালু আছে এবং জরুরি মুহূর্তে যেকোনো সময় এটা আবার সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে সেই সাথে এটা এক বিশাল রহস্য যেখানে ঢোকার অনুমতি কেবলমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাদেরই আছে আর এই গোপন সামরিক আজও অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয় যে এখানে ঠিক কি কি চলছে আর সেসব খুব কম মানুষই জানে আমেরিকার শিকাগো শহরের নিচে আছে এক বিস্ময়কর জগত যেখানে পাঁচ মাইল দীর্ঘ টানেল ব্যবস্থা পুরো শহরের নিচ দিয়ে বিস্তৃত এই সুরঙ্গ পথটা তৈরি করা হয়েছিল মূলত মানুষকে ভয়ানক শীত থেকে রক্ষা করার জন্য কিন্তু ধীরে ধীরে এটা হয়ে ওঠে এক গোপন ভূগর্ভস্থ শহর যেখানে রয়েছে দোকান পাঠ রেস্তরা অফিস এমনকি ব্যাংক পর্যন্ত শীতকালে যখন বরফে ঢাকা রাস্তায় হাঁটা কঠিন হয়ে যায় তখন হাজার হাজার মানুষ এই প্যাডওয়ে দিয়ে চলাচল করে যা বাইরে থেকে একেবারেই অদৃশ্য সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো শিকাগোর ভূগর্ভস্থ এই পথের অনেক অংশ এখনো মানুষের অজানা এমন কিছু টানেলও আছে যা এখনো অনাবিষ্কৃত এবং ইতিহাসবিদদের মতে এগুলোর মধ্যে কিছু টানেল হতে পারে পুরনো গ্যাংস্টারদের গোপন পথ এই পথ শুধু চলাচলের জন্যই না এটা এক গোপন ইতিহাসের অংশ যা আজও নিজের ভেতর অনেক রহস্য লুকিয়ে রেখেছে কল্পনা করুন এক বিশাল গুহার ভেতরে আপনি হাঁটছেন যেখানে রয়েছে বাইক চালানোর রাস্তা অ্যাডভেঞ্চার পার্ক এমনকি আন্ডারগ্রাউন্ড জিপ লাইন এই জায়গাটা হলো লুইস ভিলের মেগা কাভার্ন একসময়ের পরিত্যক্ত চুনা পাথরের খনি যা পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচাইতে বড় ভূগর্ভস্থ বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে এই বিশাল গুহার ভেতরে রয়েছে 17 মাইল লম্বা সুরঙ্গ পথ যেখানে একসময় সামরিক গোপন কার্যক্রম পরিচালিত হতো এখন এটা রূপ নিয়েছে এক পর্যটন কেন্দ্রে যেখানে মানুষ আসছে রহস্যময় পরিবেশ উপভোগ করতে সবচাইতে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো এখানে তাপমাত্রা সারা বছরই প্রায় 15 ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাই বাইরে যতই গরম থাকুক এই গুহায় সবসময় ঠান্ডা অনুভব হয় সেই সাথে এটা শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য না জরুরি পরিস্থিতিতে এটা পরমাণু হামলা থেকেও নিরাপদ আশ্রয়স্থল হতে পারে এই শহর কোন সাধারণ শহর না এটা এমন এক শহর যা পৃথিবীর ধ্বংসের পরেও টিকে থাকতে পারে গভীর পাহাড়ের গায়ে লুকিয়ে থাকা এই রহস্যময় দুর্গের নাম রেভেন রক 1950 এর দশকে যখন পরমাণু যুদ্ধের আতঙ্কে বিশ্বকাপ কাঁপছিল তখনই তৈরি হয় এই বিশাল ভূগর্ভস্থ বাংকার এখানে ঢুকতে হলে পেরোতে হবে দুইটা ভয়ঙ্কর বড় বড় দরজা যার প্রতিটা 30 টনের বেশি ওজনের আর এই দরজা বসানো হয়েছে বিশেষ স্প্রিং এর উপর যাতে করে যেকোনো বিস্ফোরণের ধাক্কা সহজেই সামলে নিতে পারে ভেতরে আছে পাঁচটা বিশাল ভবন প্রতিটাতে 15 টা করে তলা এতটাই বড় যে এখানে একসঙ্গে কাজ করতে পারে হাজারেরও বেশি মানুষ আছে নিজস্ব পানির উৎস বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা হাসপাতাল এমনকি সেলুনও এটা এমন ভাবে তৈরি যে সরাসরি পরমাণু হামলা হলেও ভেতরে থাকা মানুষগুলোর কিছুই হবে না এখানেই জরুরি মুহূর্তে আশ্রয় নিতে পারবে মার্কিন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এটা আসলে দ্বিতীয় পেন্টাগন যার অস্তিত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষ বছরের পর বছর ধরে কিছুই জানতো না তবে সবচাইতে আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রতিদিনই এখানে কাজ চলছে কিন্তু কি নিয়ে কাজ চলছে তা নিয়ে কখনো কেউ স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি 1959 সালে যুক্তরাষ্ট্র এক অবিশ্বাস্য পরিকল্পনা নেয় গ্রীনল্যান্ডের বরফের নিচে একটা গোপন সামরিক ঘাটি তৈরি করা হবে যেখানে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাখা যাবে এই প্রকল্পের নাম ছিল ক্যাম্প সেঞ্চুরি এটা বরফের নিচে কয়েক মাইল জুড়ে বিস্তৃত একটা আন্ডারগ্রাউন্ড বাংকার যেখানে ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পারমাণবিক চুল্লি ঘুমানোর কক্ষ ল্যাবরেটরি এমনকি একটা গির্জাও কিন্তু প্রকৃতি এত সহজে হার মানবে কেন বরফ ধীরে ধীরে স্থান পরিবর্তন করতে থাকায় মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই এই ঘাটি বন্ধ করে দিতে হয় সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো এই স্থাপনাটা বহু বছর পর নাসা আবারো বিশেষ রাডারের মাধ্যমে খুঁজে পায় বরফের নিচে চাপা পড়ে থাকা এই ঘাটিতে এখনো অনেক গোপন রহস্য থাকতে পারে যা আজও প্রকাশ করা হয়নি এটা দেখতে এক সাধারণ বিলাসবহুল রিসোর্টের মতো যেখানে বিশ্রাম নিতে আসেন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা কিন্তু সত্যিটা অনেক গভীর এই হোটেলের নিচে লুকিয়ে আছে এক বিশাল ভূগর্ভস্থ বাংকার যা তৈরি করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যদের জন্য 1950 এর দশকে যখন স্নায়ুযুদ্ধের উত্তেজনা চরমে তখন মার্কিন সরকার বুঝতে পারে যে একটা পরমাণু মামলা হলে দেশ পরিচালনার জন্য কংগ্রেস সদস্যদের সুরক্ষিত রাখা খুবই জরুরি তাই হোটেলের নিচেই তৈরি করা হয় এই গোপন আশ্রয়স্থল এখানে রয়েছে কয়েকশো সজ্জার ডরমেটরি হাসপাতাল সভাকক্ষ এমনকি গোপন টেলিযোগাযোগ কেন্দ্র যেখানে বসেই যেকোনো সংকটময় মুহূর্তে রাষ্ট্র পরিচালনা করা সম্ভব আর সবচাইতে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই বাংকার এতদিন ধরে গোপন রাখা হয়েছিল তবে 1992 সালে ওয়াশিংটন পোস্টের একটা প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রথমবার এই বাংকারের অস্তিত্ব ফাঁস হয় তার আগে এটা একেবারেই অজানা ছিল সাধারণ মানুষের কাছে আজও এটা এক রহস্যময় স্থাপনা যেখানে গেলে মনে হবে যেন এক অদৃশ্য যুদ্ধের জন্য পুরো জায়গাটাকে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল লাসভেগাস মানেই আলো ঝলমলে ক্যাসিনো জাগজমকপূর্ণ হোটেল আর অবিরাম পার্টি। কিন্তু এই শহরের নিচেই লুকিয়ে আছে এক সম্পূর্ণ ভিন্ন পৃথিবী এক অন্ধকার জগত যেখানে দিনের আলো কখনো পৌঁছায় না লাস ভেগাসের ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজের টানেল গুলো ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে এক গোপন আশ্রয়স্থল চলে এখানে বসবাস করে শত শত মানুষ যাদেরকে বলা হয় টানেল পিপলস তারা অন্ধকারে ঘেরা এসব টানেলের ভেতরেই তৈরি করেছে তাদের নিজেদের জন্য বসতি একসময় এই টানেলগুলো বানানো হয়েছিল বন্যার পানি সরানোর জন্য কিন্তু ধীরে ধীরে এসব জায়গা পরিণত হয় এক রহস্যময় জগতে যেখানে অনেকেই নিজেদের জীবন কাটাচ্ছে সমাজের চোখের আড়ালে আজও এই ভূগর্ভস্থ শহর এক বিস্ময়
লাসভেগাসের জাগজমকের নিচে এক বিপরীত বাস্তবতা লুকিয়ে আছে যা অধিকাংশ মানুষ কল্পনাও করতে পারে পারে না 1889 সালের এক ভয়াবহ দিন সিয়াটল শহরের বিধ্বংসী আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায় পুরো শহরই যেন ধ্বংসস্তপে পরিণত হয় কিন্তু সিয়াটলের মানুষ তো আর সহজে হার মানার পাত্র না তারা সিদ্ধান্ত নেয় আগুনে পোড়া শহরটাকে ধ্বংসস্তুপের উপরে রেখেই একটা আস্ত শহর তারা তৈরি করবে কিন্তু সমস্যা হলো আগের শহরটার ধ্বংসাবশিষ্ট এখনো রয়ে গেছে তাই তারা এক অভাবনীয় কাজ করে নতুন সিয়াটল শহরকে বানানো হয় পুরনো শহরের উপরেই কয়েক তলা
উঁচু করে ফলে আগের সেই পুড়ে যাওয়া দোকানপাট রাস্তাঘাট ব্যাংক সবই রয়ে যায় মাটির নিচে ভূগর্ভস্থ এক নতুন জগত হিসেবে যদিও কয়েক দশক পর্যন্ত এই গোপন শহরটা জনসাধারণের অগোচরেই ছিল কিন্তু কিছু মানুষ এটাকে সুযোগ হিসেবে নেয় ভূগর্ভস্থ এই শহরটা ধীরে ধীরে পরিণত হতে থাকে এক অন্ধকার জগতে যেখানে শুরু হয় চোরাচালান নিষিদ্ধ ব্যবসা এমনকি গোপন মদের আসর এক সময় এতটাই বিপদজনক হয়ে ওঠে যে সরকার বাধ্য হয়ে সবকিছু বন্ধ করে দেয় তবে আজও এই জায়গাটা রহস্য ঘেরা সাল 1978 এক ধনী ব্যক্তি তৈরি করলেন এমন এক বাড়ি যা বাইরের দুনিয়ার ধ্বংস থেকে তাকে রক্ষা করবে তবে এটা কোন সাধারণ বাড়ি না এটা ছিল ভূগর্ভস্থ এক বিলাসবহুল প্রাসাদ 26 ফুট মাটির গভীরে অবস্থিত এই বাড়িটাতে রয়েছে আধুনিক সব সুবিধা একটা সুইমিং পুল ব্যক্তিগত বার কৃত্রিম আকাশ এমনকি একটা ছোট্ট সেই সাথে বাড়ির দেয়ালে এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল যাতে করে আপনার মনে হয় যে আপনি বাইরে আছেন সূর্যের আলো গাছপালা এমনকি দিনের বিভিন্ন সময়ের আলোর পরিবর্তনও কৃত্রিম ভাবেই তৈরি করা হয়েছিল এর মালিকের বিশ্বাস ছিল পৃথিবীতে কোন বড় যুদ্ধ বা দুর্যোগ এলে এই ভূগর্ভস্থ বাড়ি হবে তার নিরাপদ আশ্রয় আজও এটা রয়েছে এবংমাঝে মাঝে নিলামে বিক্রির জন্য এটা তোলা হয় তবে এটা এখনো এক রহস্যময় স্থান যেখানে ঢোকার অনুমতি খুব কম মানুষই পায় এই ভূগর্ভস্থ প্রাসাদ যেন এক লুকানো দুনিয়া যেখানে বাস্তব এবং কল্পনার সীমারেখা মিলেমিশে এক হয়ে গেছে

0 Comments